Monday, March 16, 2015

বৃষ্টির রাত ,অঝর ধারায় বৃষ্টি হচ্চে সেই সকাল থেকে। থামার কোনো নামগন্ধ নাই। কাব্যের মা ,লিলি বেগম বিড়বিড় বলছেন আজকে অনেক মেহমান আসবে সেই জন্য এই গজব নামছে আর কিছুই না। মানুষ রাগের মাঝে অনেক অসুন্দর কথা বলে যা রাগ শেষ হলে টের পাই। আজকে কাব্যদের গ্রামের মসজিদে তাফসির হবে,অনেক বড় বড় বক্তা আসবেন। সেই লক্ষে কাব্যের ফুফু ও ফুফাত ভাই -বোনেরা আসবে। কাব্যের ভাবতেই ভালো লাগতেছে। লিলি বেগম এই জন্য একটু চিন্তিত বৃষ্টির জন্য কারণ বৃষ্টির পানি রান্না ঘরে পড়ে যা মেঝের অবস্থা খরাপ করে দেয়। অনেক কুটুম আসবে,সব সময় চা-বিস্কুটের উপর থাকতে হবে,এখন এই ভাবে বৃষ্টি পড়লে সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না। আর অসম্ভব হলে পরে মান ইজ্জত থাকবে না। পর্দার আড়ালে আমার মা ও বোনেরা,এই বৃষ্টির দিনে নিশ্চই পিটা-সন্দেশ আর নানান খাবার নিয়ে ভীষণ ঝামেলায় আছেন তবুও বলছি আমরা একটু সময় বের করি কিছু কথা শুনার জন্য।  প্রথমেই আমার সালাম গ্রহণ করুন। কাব্যের ফুফাত বোন্ সীমা বলছে'' আচ্ছা মামী,এখন তো  তোমাদের আগের চেয়ে অবস্থা ভালো তাহলে ঘর-দুয়ার টিকটাক করতেছ না কেন ?এত কৃপণ হলে হয়। ........'' মা রে তর মামা যা টাকা দেন এইটা দিয়ে তো ঘর-সংসার চলে না,তার উপর আবার কাব্যের পড়ালেখায় অনেক খরচ হয়ে যায়। ও আচ্ছা,ভালো কথা। জায়গা জমি কিছু কিছু  নাকি ? নারে মা ,জায়গা জমি কেনার টাকা হাতে নাই। তবে দুয়া করিস যেন ছেলেমেয়েদেরকে মানুষ করতে পারি। সবাই কানাগুষা করে কাব্যের বাবা একটা বাদাইম্মা আর মা একটা হইছে শুধু খায় আর ঘুমায়। কাব্যের কানে যায় এই কথাবার্তা যা থাকে আহত করে। কাব্যের মায়ের কথা হচ্ছে ছেলেমেয়েদেরকে না পড়িয়ে,সুন্দর একটা পরিবেশ না দিয়ে ,সাধ্যের ভিতরে ভালোমন্দ না খাইয়ে শুধু টাকা জমিয়ে জমিজমা কেনার কোনো মানে হয় না। এদেরকে ভালো পরিবেশ দিলে ,ভালো শিক্ষা দিলে এরাই  তাদের নিজের গন্তব্য টিক চিনে নেবে। কাব্যকে ডেকে আজ এত সহজে পাব যাবে না। খাঁচার পাখি আজ অনেকদিন পর একটা অনুষ্টানের কারণে ছাড়া পাইছে। তবে এটা নিশ্চিত যে কাব্য মসজিদে তাফসির শুনতেছে না। তাফসির তো একটা অনুষ্টান মাত্র,কাব্যের কাছে। ক্লাস সিক্স এ পড়ে ,কাব্য তখন। খুব লজ্জার মধ্য দিয়ে একটা তাফসিরময় রাত গেল। আজ ৪ বছর পর ,কাব্য দেশে ফিরছে MBA শেষ করে,অস্ট্রেলিয়া থেকে ।স্কলারশিপ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছিল।  স্নিগ্ধা,কাব্যের ইমিডিয়েট ছোট বোন এবার 3RD ইয়ার এ। বাংলায় অনার্স করতেছে। সবচেয়ে কচ্চর যেটা রুপম,অসম্ভব ঝালায় সবাইকে। সে এবার ইন্টার 1ST ইয়ার এ। রায়হান আলম অনেক খুশি ,লিলি বেগমের উপর। টাকা দিয়ে জায়গা কিনলে কি হত উনি জানেন না তবে সন্তানদেরকে নিয়ে গর্ব করা যায় অবলীলায়। ছেলে আবার চলে যাবে চার মাস পর।  অস্ট্রেলিয়ায় একটা জব এ করে আসছে ইতিমধ্যে। অনেকদিনের সপ্ন বাবামায়ের নামে একটা স্কুল করবে এই জন্য দেশে আসা। 

No comments:

Post a Comment