পাবলিক স্পিকিং : কিভাবে মানুষের সামনে কথা বলার ভয় দূর করা যায় ?
মানুষের সামনে কথা বলার নামই হচ্ছে পাবলিক স্পিকিং। এই কথা বলতে আমার আপনার যা সমস্যা। মানুষের সামনে কথা বলতে গেলে যা মনে হয় সেটা হচ্ছে মানুষ কী ভাবছে আমাকে নিয়ে। এই ভয় চলে যায় তবে কথা বলতে হবে। কথা বলার ভয় কথা বলে তাড়াতে হবে।
সত্য গল্প শুনুন :
নবম-দশম ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা একটা স্কুলের সর্বোচ্চ লেভেলের ছাত্রছাত্রী। এরা স্কুলের সভা-সমিতি অথবা ২১শে ফেব্রুয়ারী ,২৬শে মার্চ এবং ১৬ই ডিসেম্বরের অনুষ্টানগুলোতে বক্তব্য দেয়। এমনকি ক্লাস সিক্স,সেভেন এ যারা পড়ে তারাও স্পিচ দেয়। আমি তো পারিনা। আমি ভাবতে লাগলাম কেন আমি পারিনা বক্তব্য দিতে? আমার থেকে ছোট ক্লাসের এরাও তো শত শত ছাত্রছাত্রীর সামনে কথা বলছে তবে আমি নই কেন। স্কুল জীবনে কথা বলতে পারিনাই। ভয় আমার জয় করা হয়নি।
এসএসসি তে এ প্লাস পাওয়ার পর অনেক জায়গায় যেতে হলো। সংবর্ধনা দিলো। এক জায়গায় আমার নাম দিয়ে বসছে যে আমি স্টেজে গিয়ে কিছু একটা বলবো। আসমান ভেঙে মাথায় পড়লো অবস্থা। আমি ? কেমনে ? আমি ব্যাক্তি মানুষ নারভাস হতে পারি তাই বলে এ প্লাসকে তো আর ছোট করতে পারিনা। এ প্লাস আমাকে অনেক সাহায্য করলো স্টেজে গিয়ে কথা বলতে। আমি ঘামে ডুবে যাচ্ছি,কথা মুখে আসে না ,হাতপা কাঁপে – এইগুলার মধ্যে দিয়ে জীবনের প্রথম পাবলিক স্পিচ দিলাম।
কলেজে উঠে ,ওরিয়েন্টেশন এ স্পিচ দিবে এই রকম একটা ছেলে ও একটা মেয়ে দরকার। কোনো কিছু না ভেবেই বলে উঠলাম আমি স্পিচ দেব। আমি আর গীতাঞ্জলি নামের একটা মেয়ে স্পিচ দিলাম প্রায় এক হাজার মানুষের সামনে।
শাহখাকী মাদ্রাসা (একটা স্থানীয় মাদ্রাসা ) শিক্ষক খুজতেছিল ইংলিংশ এবং গণিতের জন্য। আমাকে মাদ্রাসা কমিটির একজন এসে বললেন শিক্ষকতা করার জন্য। যে ছেলেটা মাত্র ছয়মাস পর আমেরিকা চলে যাবে সে টাকার চিন্তা করে এই জবটা নিবে ? আমি শিক্ষকতা করলাম শুধুমাত্র নতুন কিছু আগামীর সাথে পরিচিত হতে আর নিজের পাবলিক স্পিকিং স্কিলটা আরো সুন্দর করার জন্য। আনন্দের বিষয় এই আগামীরা আমাকে টেক্সট করে বলে আমি নাকি খুব ভালো পড়াতাম। আমি লজ্জা পাই এইগুলা শুনে। ...সরাসরি প্রশংসা আমি নিতে পারি না।
ওয়াসিংটন এ ,সিয়াটেল কলেজে নিজের দেশের হিস্ট্রি নিয়ে কথা বলতে হবে। নিজের দেশের হিস্ট্রি কে না চায় মানুষকে জানাতে ! ১৫ মিনিট কথা বলতে হলো।
নিউ ইয়র্কে এসে ওয়েস্টার্ন ইউনিয়ন এ কাজ। তাও আবার কাস্টমার সার্ভিস। কথা বলার কাজ। এক বড় ভাই কাজটা পাইয়ে দিলেন ,চির কৃতজ্ঞ উনার কাছে। অবিরত কথা বলতে হয়।
ASA কলেজে এখন পর্যন্ত যে গ্রূপ এসাইনমেন্ট দিতো সেগুলার মধ্যে আমি কথা বলতাম এবং বলার সময় আমি পাবলিক স্পিচ দিচ্ছি মনে করে কথা বলতাম । আর সিঙ্গেল এসাইনমেন্ট হলে তো আর কথাই নাই।
তাহলে কী বুঝা গেলো ? পাবলিকলি কথা বলার জন্য আপনাকে শুধু কথা বলে যেতে হবে। ভেরি সিম্পল।